ছেলেদের মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

ছেলেদের মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়: মুখের উজ্জ্বলতা কে না চায়। যারা দিনের পর দিন চলে যায় নিজের বা চেহারার কোন যত্নই নেয়না তাদের কে জিজ্ঞাসা করলে তারা ও বলবে যে তারা ও মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চায়। দেখতে আমরা সুন্দর বা কালো হইনা কেন যদি চেহারা উজ্জ্বল থাকে তাহলে অসুন্দর কে ও সুন্দর দেখাবে।

দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকি। বিভিন্ন কাজে, চাকরিতে কেউ বা রোদে পুড়ে কাজ করে নিজের চেহারার উজ্জ্বলতা নষ্ট করে ফেলছেন। আয়নার সামনে দাড়ালেই মনটা খারাপ হয়ে যায়  চেহারার অবস্থা দেখে। সারাদিন ব্যস্ততার কারণে নিজের বা চেহারার যত্ন নেওয়ার সময়ই পাওয়া যায়না। তারপর ও যখনই একটু সময় পায় তখনি আমরা চেষ্টা করি মুখের উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে।

ছেলেদের মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় 

ছেলেদের মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা খুব কঠিন কাজ নয়। যে কেউ চাইলেই মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারি। তবে এর জন্য আমাদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। তবে এর জন্য আহামরি কিছু করতে হবে না। দৈনন্দিন জীবনে কিছু জিনিস মেনে চললেই আপনি মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে পারেন। এর জন্য সব থেকে বেশি প্রয়োজন নিজের প্রতি নিজের যত্ন নেওয়া।

বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের ক্রিম, স্নো বা ফেসওয়াশ পাওয়া যায়, কিন্তু সেগুলি সবার ত্বকে মানায় না। বর্তমানে নকল প্রোডাক্টের ছড়াছড়িতে আপনি বুঝতেই পারবেন না কোনটা আসল আর কোনটা নকল। ফলে দেখা যায় মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি তো দূরের কথা উল্টো মুখে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় যেমন, ব্রণ, বিভিন্ন কালো দাগ, ডার্ক সার্কেল, চেহারার উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

ছেলেদের মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

তাই আমরা ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি উপায় জানবো। যাতে কোন বেড ইফেক্ট নেই। নিয়মিত উপায় গুলো মেনে চললে দ্রুত আপনার মুখের উজ্জ্বলতার কারিশমা দেখতে পারবেন। তাই নিচে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি বিভিন্ন উপায়  সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই সম্পূর্ণ আর্টিক্যালটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কত কিছুই করে থাকি। কিন্তু সঠিক নিয়ম না জানা থাকায় মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারিনা। সারাদিন বাহিরে কাজ করে বা মহিলারা রান্না বান্না করে তখন আর রূপচর্চা করতে মন চাইনা। তাই নিচে কিছু নিয়ম মেনে চললে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। তো চলুন জেনে নেই।

১। নিয়মিত ঘুম

আমাদের একটা বাজে স্বভাব আছে রাতে দেরি করে ঘুমায়। রাত হলে ফেসবুকিং, চ্যাটিং করে সময় নষ্ট করে অনেক দেরিতে ঘুমোতে যায়। যা আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে। এবং চেহারা নষ্ট হয়ে যায়। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যাক্তির রাতে কমপক্ষে ৪-৬ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। এর কম হলেই বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ছেলেদের ত্বক ফর্সা করার সবচেয়ে ভালো ১০ টি ক্রিম।

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে সকালে আপনার চোখ ফুলে যেতে পারে । নিয়মিত ঘুম কম হলে চোখের নিচে কালো দাগ দেখা যাবে। আপনার ক্লান্ত হয়ে পরবে। আপনার মুখের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যাবে। মুখে বিভিন্ন দাগ বা ব্রণ দেখা দিতে পারে। তাই মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য আপনাকে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমোতে হবে। ঘুমানোর সময়ে আপনার ত্বকের কোষগুলিকে বুস্ট করা হয়। ফলে ত্বকের কোষ গুলো সজিব হয় এবং মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

২। প্রচুর পানি পান করুন

পানি সকল রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। যত বেশি পানি পান করা যায় ততই উপকার। পানি পান করলে আমাদের শরীরের ভেতরের ময়লা দূর করে এবং শরীরে কোষ গুলোকে সতেজ করে এবং নতুন কোষ তৈরি করে।
এছাড়াও আপনি পানির সাথে আরো বিভিন্ন জিনিস মিশিয়ে ও খেতে পারেন। যেমন, প্রতিদিন সকালে ফুটন্ত পানিতে এক চিমটি দারুচিনি মিশিয়ে পান করতে পারেন। এটি আপনার দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতেই সাহায্য করবে না শুধু পাশাপাশি আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করবে। এ ছাড়া আপনি চাইলে পানিতে স্ট্রবেরির রস মিশিয়ে নিয়মিত পান করতে পারেন। এটি নিয়মিত পান করার ফলে মুখের বিভিন্ন দাগ দূর হয় এবং মুখে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

৩। নিয়মিত ব্যায়াম করুন

ব্যায়াম মানেই শুধু ওজন কমানো, এটা ভাবা ও ভুল হবে। কারণ ব্যায়াম ওজন কমানোর পাশাপাশি আপনার শরীরকে ফিট রাখতে এবং মুখে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । ব্যায়াম করলে শরীর পাতলা হয় মন মানুষিকতা ভাল থাকে এবং মুখের ঔজ্জ্বলতা বাড়ে। ব্যায়াম করার ফলে শরীর ক্লান্ত হয়ে যায় ফলে রাতে গভীর ঘুম হতে সাহায্য করে যা মুখের ত্বকের জন্য খুবই উপকারি। 

আপনি আরো কিছু ব্যায়াম রয়েছে যেমন, হাঁটা, সাইকেল চালানো, জগিং, স্কিইং, নাচের মতো ব্যায়ামগুলি নিয়মিত করতে পারেন। এই গুলো ত্বককে উজ্জ্বল করার জন্য দুর্দান্ত কার্যকর। নিয়মিত প্রতিদিন ১০ মিনিট ব্যায়াম করুন এক মাস পরেই দেখতে পারবেন আপনার চেহারা অন্যরকম হয়ে গেছে যা দেখতে আপনাকে আগের থেকে ও সুন্দর ও উজ্জ্বল দেখাবে।

৪। যোগ ব্যায়াম

যে কোন ব্যায়ামই আপনার শরীরের জন্য বা ত্বকের জন্য। তবে সেটা যদি যোগব্যায়াম হয় তাহলে তো কথাই নায়। কেননা শারীরিক ব্যায়ামের পাশাপাশি এটি আপনাকে মানসিকভাবে প্রশান্তি দিবে। এবং আপনার শারীরিক সুন্দর্য ও ত্বকের সুন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

আরো পড়ুনঃ পুরো শরীর ফর্সা করার প্রাকৃতিক উপায় এবং শরীর ফর্সা করার সেরা ৫টি ক্রিম। 

যোগ ব্যায়াম বা যোগাসনের প্রধান যেগুলো মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে তা হলো- চক্রাসন, সর্বাঙ্গাসন, হালাসন, শীর্ষাসন এবং প্রাণায়াম। এই ব্যায়াম গুলো শরীরে অক্সিজেন ও রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি করে , যার ফলে মুখে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

৫। সাবান ব্যবহার করবেন না

গোসলের সময় সাবান ব্যবহার না করলে যেন আমাদের গোসলই হয়না। প্রতিদিন ত্বকে আমরা সাবান ব্যবহার করি । কিন্তু আমরা হয়তো জানিনা যে অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার করলে আপনার মুকের হোক বা শরীরের ত্বকের সমস্যা হতে পারে। কারণ হল  সাবানে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি হয় যা অতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বকের কোষ কে নিস্তেজ করে দেয় ।

পাশাপাশি আপনার ত্বককে রুক্ষ ও শুষ্ক করে দেয়।  ত্বক থেকে প্রাকৃতিক তেল এবং আর্দ্রতা কমে যায় । ফলে ত্বকের পিএইচ লেভেল ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়া শুরু করে।

তাই প্রতিদিন সাবান ব্যবহার করবেন না। বিশেষ করে মুখে একদমই সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। আপনি চাইলে বাজারে পাওয়া যায় খুব ভাল মানের ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। এমন দেখে যা আপনার ত্বকে স্যুট করে। তাহলে আপনার ত্বকের কোন ক্ষতি হবে না। ত্বকের উজ্জ্বলতা ঠিক থাকবে।

৬। মানসিক চাপে থাকবেন না

স্ট্রেস বা মানসিক চাপ একটি ভয়াবহ সমস্যা। খুব কম মানুষই পাওয়া যাবে যারা মানসিক চাপে থাকেন না। মানসিক সমস্যা এটা শুধু মানসিকভাবে আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না পাশাপাশি শারিরীকভাবে ও আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আপনার স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। মানসিক চাপের কারণে যে সমস্যা দেখা যায় তা হল মুখে ব্রণ হওয়া।  

তাই শরীর ও মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আপনাকে আগে মানসিক চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মানসিক চাপ দূর করতে  ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে পারেন। সবসময় চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে। টেনশনমুক্ত থাকলে শরীর স্বাস্থ্য এমনিতেই ভাল থাকে।

৭। ঘুমানোর আগে আপনার মুখ পরিষ্কার করুন

আমরা অনেক সময় বাহিরে কাটায় বাইরের দূষণ, ধুলোবালির কণা আপনার মুখের ছিদ্র দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে এই ময়লা আমাদের ত্বকের অনেক ক্ষতি করে। অতিরিক্ত ধুলোবালি আমাদের ত্বককে রুক্ষ করে দেয়। তাই বাহির থেকে আসার পর এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বে ত্বককে ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিৎ।
 
বাহির থেকে আসার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এবং প্রতিদিন রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মুখ পরিস্কার করুন। তাহলে মুখে জমে থাকা ময়লা দূর হয়ে যাবে। আপনার মুখ হবে উজ্জ্বল। মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য রাতে ভাল নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ নাইট ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম ও বাজারের সেরা ৫ টি নাইট ক্রিম।

৮। আপনার মনকে শান্ত রাখুন

সবসময় নিজেকে শান্ত ও কন্ট্রোলে রাখতে চেষ্টা করুন। কোন কিছু নিয়ে হতাশা বা রাগ হলে নিজেকে শান্ত রাখুন। কারণ এইগুলোর জন্য আপনার মুখের ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যায়। মুখের মধ্যে একটা আলাদা চাপ পরে যা দেখতে ও খারাপ দেখায়। তাই পরিস্থিতি যেমনই হোকনা কেন সকল অবস্থায় নিজেকে শান্ত রাখা ও মানিয়ে নিতে হবে। তাহলে মুখে উজ্জ্বলতা অটুট থাকবে।

৯। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খান

স্বাস্থ্যকর খাবার আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য একটি বিষয়। কখনো কখনো পুষ্টির অভাবে আমাদের স্বাস্থ্য চেহারা দুটোই নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমাদের খাদ্যতালিকায় বেশি বেশি তাজা ফল এবং সবুজ শাকসবজি রাখা উচিৎ । এই গুলো আমাদের শরীরে পুষ্টি যোগাবে এবং স্বাস্থ্য  ত্বক ভাল রাখতে দারুণ ভাবে কাজ করবে। তাই বেশি বেশি শাক সবজি ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়

মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কত কিছুই তো করি। যদি ও এটা এতোটা সহজ নয় আবার কঠিন ও না। মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সর্বপ্রথম যেটা প্রয়োজন সেটা হল ননিজের প্রতি নিজের যত্ন। তারপর কিছু নিয়ম মেনে চললে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারবেন। উপরে উল্লেখিত কিছু নিয়ম মেনে তারপর ঘরোয়া কিছু উপায় চেষ্টা করতে পারেন। তাহলে আপনার মুখের উজ্জ্বলতা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। তো চলুন জেনে নেই ঘরোয়া উপায় গুলো।

অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরা মুখের জন্য সবথেকে জনপ্রিয়। এটা আপনার ত্বককে উজ্জ্বল রাখার একটি আশ্চর্যজনক ঘরোয়া উপায় যা ত্বকের শুষ্কতা কে দূর করে দেয় ।এবং এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-একনে বৈশিষ্ট্য মুখের বিভিন্ন দাগ, ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে এবং মুখের জ্বালাপোড়াও কমায়।

ব্যবহারের নিয়ম

বাজারে অ্যালোভেরার জেল পাওয়া যায়। আপনি যেকোনো সময় আপনার ত্বকে এই অ্যালোভেরার জেল লাগাতে পারেন। আপনার ত্বক যদি স্বাভাবিক হয় তাহলে কোন ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে এই জেল ব্যবহার করতে পারেন।

আপনার বাড়িতে যদি অ্যালোভেরার গাছ থাকে তবে এর একটি কাঠি ভেঙে তা থেকে জেল বের করে মুখে ঘষতে পারেন বা লাগাতে পারেন। এটি মুখের ব্রণ, কালো দাগ নিমিষেই দূর করতে সাহায্য করবে। আবার রাতে ঘুমানোর আগে অ্যালোভেরার জেল দিয়ে আপনার ত্বকে ম্যাসাজ করে ঘুমাতে পারেন। এতেও অনেক উপকার পাবে।

আরো পড়ুনঃ চুল পড়ার কারণ ও তার প্রতিকার 

সবুজ চা

গ্রিন টি বা সবুজ চা এটা শুধুমাত্র শরীরের জন্যই উপকারী তা নয় পাশাপাশি এটি ত্বকের জন্য ও বেশ উপকারী। সবুজ চা আপনার মুখে ব্যবহারে মুখকে সূর্যের আলোর ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের ক্যান্সারের মতো বড় ধরনের সমস্যা থেকে ও রক্ষা করে। এটি মুখের ব্রণ, ডার্ক সার্কেল থেকে ও রক্ষা করে এবং বয়সের অতিরিক্ত ছাপ দূর করে।

ব্যবহারের নিয়ম

প্রায় আধা কাপ পানিতে গ্রিন টি নিয়ে ভালভাবে ফুটিয়ে নিন। এরপর ব্রাউন সুগার এবং ক্রিম একসাথে মিশিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন।  এতে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি হবে।

নারিকেল তেল

নারিকেল তেল আমরা শুধু চুলের জন্যই ব্যবহার করি। কিন্তু চুল ছাড়া ও  এটা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারি। এটি ব্যবহারে আমাদের ত্বককে ঠান্ডা রাখে। এটি আমাদের ত্বককে সূর্যের প্রবল আলো থেকে রক্ষা করে এবং এতে রয়েছে একটি চমৎকার অ্যান্টি-এজিং উপাদান যা ত্বকে অতিরিক্ত বয়সের চাপ রোধ করে।

ব্যবহারের নিয়ম

নারিকেল তেল আমরা সাধারণ ক্রিমের মত ব্যবহার করতে পারি। এটি আপনার ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন এবং পুরো শরীরে ও লাগাতে পারেন।

হলুদ

হলুদ রান্নার মশলা হলে ও ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে হলুদ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ত্বকের শুস্ক ভাব ও বিভিন্ন দাগ দূর করতে সহায়তা করে।

ব্যবহারের নিয়ম

শুধু হলুদ বাটা মুখে লাগাতে পারেন। অথবা হলুদের সঙ্গে বেসন ও জল মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন।
তারপর মুখে ভালভাবে লাগিয়ে রাখুন এবং ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে আলতো করে ঘষে তুলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটা আপনার ত্বকে দ্রুত উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারে।

দুধ

দুধ যেমন শরীরের পুষ্টির জন্য কাজ করে তেমনই দুধও ত্বকের জন্য খুবই উপকারি। আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে দুধ হতে পারে আপনার জন্য সবথেকে ভালো ময়েশ্চারাইজার । দুধে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি গুনাগুন ও ভিটামিন এ আপনার মুখের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে চমৎকার কাজ করে।

ব্যবহারের নিয়ম

কাঁচা দুধের সাথে বেসন ও মধু মিশিয়ে চমৎকার একটি প্যাক তৈরি করুন। তারপর এটা মুখে লাগিয়ে প্রায় 15 মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর আলতো করে ধুয়ে ফেলুন। এটি দ্রুত মুখ উজ্জ্বল করবে। এছাড়াও আপনি চাইলে সপ্তাহে এক বা দুইবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার  ৮ টি ক্রিম ও তার ব্যবহার 

মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির খাবার

মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে খাবারের প্রভাব ও রয়েছে। কেননা পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন, সঠিক খাবার আপনার ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। সবসময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। তবে এমন কিছু খাবার আছে যা ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। দৈনন্দিন খাবারের মেন্যুতে এ খাবারগুলো রাখলে আপনার শরীরের পুষ্টির পাশাপাশি ত্বক ও পুষ্টি লাভ করবে। এবং ত্বকের সুন্দর্য ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। তো চলুন জেনে ত্বকের জন্য উপকারী খাবারগুলো :

কলা

কলা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। পাশাপাশি আপনার ত্বক ভাল রাখার জন্য চমৎকার উপকারী একটি ফল। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-এ, যা স্বাস্থ্যের উপকারিতার পাশাপাশি এটি ত্বকের মলিনভাব দূর করতেও সাহায্য করে।

গাজর

গাজর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল। গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন আছে, যা আমাদের শরীরে গিয়ে ভিটামিন-এ তে রূপান্তরিত হয়। নিয়মিত গাজর খেলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক হবে সজীব ও উজ্জ্বল।

পানি

যত বেশি পানি পান করবেন তত ভাল। বেশি পানি পান করাতে কোন ক্ষতি নেই। আপনার শরীর বা ত্বক ভালো রাখতে বেশি করে পানি পান করুন । দৈনিক অন্তত দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করুন। পানি আপনার শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ত্বকের ভাঁজ দূর করে। অতিরিক্ত পানি পান করলে শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বকে সজীবতা ফিরে আসে এবং উজ্জ্বল দেখায়। বেশি বেশি পানি খেলে ব্রণ দূর হয়।

বাদাম

বাদাম অন্তত পুষ্টিকর একটি খাবার। বাদামে রয়েছে  ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং ভিটামিন-ই এর মত গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপাদান। নিয়মিত  বাদাম খেলে পুষ্টি উপাদানগুলো ত্বককে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।

ভিটামিন-সি যুক্ত ফল

বেশি বেশি ভিটামিন-সি যুক্ত ফলফলাদি খেতে পারেন। নিয়মিত ফলমূল খেলে ত্বক ভালো থাকে ত্বকের সজিবতা ফিরে আসে। পেয়ারা, আনারস, পেঁপে, নানা রকম বেরি জাতীয় ফল ইত্যাদি নিয়মিত খেলে ত্বককে ভালো রাখে এবং বয়সের চাপ দূর করে।

মিষ্টি কুমড়া

ত্বকের যত্নে সবজি হিসেবে মিষ্টি কুমড়া খেতে পারেন। মিষ্টি কুমড়ায় অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে।  মিষ্টি কুমড়ায়  বিটা ক্যারোটিন নামের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান রয়েছে যা শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে। তাই মিষ্টি কুমড়া খেলে ত্বককে সজীব, নরম ও সতেজ রাখে ।

করলা

করলা সবজি হিসেবে আমরা খায় আবার অনেকেই খেতে পারেনা। কিন্তু করলায় প্রচুর পুষ্টিকর উপাদান। এর মধ্যে  ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি যা স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের জন্যও বেশ উপকারী। করলা খেলে আপনার ত্বকের রংয়ের অসমতা দূর করার পাশাপাশি উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

মাছ

নিয়মিত মাছ খেতে পারেন। মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাট থাকে যা স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এই মাছ ত্বকের কোষ সজীব রাখে ত্বক করে তুলে উজ্জ্বল এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা ও ক্যান্সারের থেকে রক্ষা করে।

গ্রিন টি

গ্রিন-টি এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে । তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা,ডার্ক সার্কেল এবং ব্রণের সমস্যা দূর করে এবং চেহারায় অতিরিক্ত বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।

শেষ কথা 

মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সবাই চেষ্টা করি। আপনি চাইলে কিছু নিয়ম মেনে চললে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে পারেন। উপরে উল্লেখিত ঘরোয়া প্রতিকার ও খাবার গুলো খেলে আপনি সহজেই মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারেন। উল্লেখিত বিষয়সমূহ মেনে চললে তা শুধুমাত্র আপনার মুখকে উজ্জ্বল করবে না বরং আপনার গায়ের রং ও ফর্সা করতে সহায়তা করবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url