বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা হলে করণীয়। বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ।

শিশুদের পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া সব থেকে বেশি দেখা দেয়। সাধারণত কোন জীবাণু পেটে ঢোকার কারণে শিশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা দেখা দেয়। শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে সেটা চিন্তার বিষয় । এর কারণ হল, শিশুরা ডায়রিয়া থেকে পানি শূন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে অন্যদের তুলনায়। তাই ডায়রিয়া হলে  দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা না হলে পানিশূন্যতার কারণে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে ।

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হলে করণীয়

তাই আজকে আমাদের এই আর্টিক্যালে শিশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। শিশুদের ডায়রিয়া সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিক্যালটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আজকের আর্টিক্যালে যেসব বিষয়ে কথা হবে তা হলঃ-

  • শিশুদের ডায়রিয়ার লক্ষণসমূহ।
  • শিশুদের ডায়রিয়ার কারণ।
  • শিশুদের ডায়রিয়ার ঘরোয়া চিকিৎসা।
  • শিশুদের পাতলা পায়খানার সিরাপ।
  • শিশুদের ডায়রিয়া প্রতিরোধে করণীয়।
  • কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।

শিশুদের ডায়রিয়ার লক্ষণ

ডায়রিয়ার লক্ষণ আমরা শুধু এটাই জানি যে, দিনে ৩-৪ বার এর বেশি পাতলা পায়খানা হওয়া। কিন্তু আমরা সাধারণত ‘ডায়রিয়া’ ও ‘পাতলা পায়খানা’ শব্দ দুটি ভিন্ন হলে ও আমরা একই অর্থে ব্যবহার করি। আমরা ভাবি একবার হঠাৎ পাতলা পায়খানা হলেই বুঝি ডায়রিয়া হয়ে গেছে। 

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা হলে করণীয়। বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ।

আসল কথা হলো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর মতে, পায়খানা নরম বা পাতলা হওয়া মানেই ডায়রিয়া নয়। সারাদিনে ৩/৪ বার বা তার বেশি নরম বা পাতলা পায়খানা হলে তাকেই সাধারণত ডায়রিয়া বলা হয়ে থাকে । 

আরো পড়ুনঃ পায়খানা ক্লিয়ার করার উপায়।পায়খানা হওয়ার ঔষধের নাম

আবার অনেক সময় দেখা যায়, যে শিশুরা মায়ের বুকের দুধ পান করে, তাদের পায়খানা স্বাভাবিকভাবেই একটু নরম আর আঠালো হয়ে থাকে। সেটাকে ডায়রিয়া বলা যাবে না । তবে শিশু যদি দুধ খাওয়ার পর তার স্বাভাবিকের তুলনায় ঘনঘন পাতলা পায়খানা দেখা দেয় তাহলে সেটাকেও ডায়রিয়া বলা হয় ।

শিশুদের পানিশূন্যতার লক্ষণ

ডায়রিয়া হলে বার বার পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন লবণ বেরিয়ে যায়। যদি তখন এই ঘাটতি পূরণ না করা হয় কোন চিকিৎসা বা অন্য কিছু না করা হয়, তখনই বাচ্চার পানিশূন্যতা দেখা দেয়। আর এই পানিশূন্যতা পূরণ করা না হলে আর সেটা যদি বেড়ে মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যায় তাহলে বাচ্চার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই ডায়রিয়ার প্রথম চিকিৎসা ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাচ্চার পানিশূন্যতা পূরণ করা।

আপনার বাচ্চা পানিশূন্যতায় ভোগছে কিনা সেটা বুঝার জন্য তার প্রধান কয়েকটি লক্ষণ নিচে উল্লেখ করা হল—

  • বাচ্চার মুখ শুকিয়ে যাওয়া।
  • বার বার পিপাসা লাগা।
  • চোখ শুকনো লাগা বা চোখ খচখচ করা।
  • মুখ ও ঠোঁট শুকিয়ে আসা শুকনো লাগা।
  • প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন হয়ে যাওয়া, গাঢ় হলুদ, তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব করা।
  • দিনে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় ৪ বারের চেয়েও কম প্রস্রাব হওয়া।
  • বাচ্চার মাথা ঘুরানো বা ঝিমঝিম করা।
  • বাচ্চাকে দেখে খুব ক্লান্ত মনে হওয়া।

শিশুর বয়স যদি ৫ বছরের কম হয় তাহলে আরও কিছু লক্ষণ দেখা যায়। এসব লক্ষণ অন্য গুলোর চেয়ে তুলনামূলকভাবে মারাত্মক হয়ে থাকে। তাই তখন অবহেলা না করে দ্রুত শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে । সেই লক্ষণ গুলো হল :-

  • বাচ্চার শ্বাসপ্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন হঠাৎ বেড়ে যাওয়া। 
  • কান্না করলেও চোখে পানি না আসা বা পানি না পড়া।
  • মাথার তালুর সামনের দিকের নরম অংশটি বসে গেছে এমন মনে হলে এবং ঝিমিয়ে পড়া।

শিশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণ

শিশুদের বিভিন্ন কারণে ডায়রিয়া দেখা দেয়। তবে যেসব কারণে সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার দেখা যায় তা নিচে উল্লেখ করা হল

  • পেটে হঠাৎ কোন জীবাণুর আক্রমণ করলে বা কোন ইনফেকশন হলে। 
  • নরোভাইরাস নামের ভাইরাস আক্রমণ করলে।
  • ফুড পয়জোনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া সব থেকে বেশি হযে থাকে।
  • কোন ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে। ( যে কোন খাওয়ার আগে ঔষধের সাথে দেওয়া নির্দেশিকা পড়ে দেখবেন ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো কি কি)
  • নির্দিষ্ট কোন খাবারে এলার্জি বা বিশেষ কোন খাবার খেতে না পারা  বা হজম করতে না পারা।

শিশুদের পাতলা পায়খানার ঘরোয়া চিকিৎসা

শিশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে ডাক্তার এর কাছে না গিয়ে প্রাথমিক ভাবে ঘরে বসেই কয়েকটি নিয়ম  মেনে ডায়রিয়ার চিকিৎসা করতে পারবেন। তাই ঘরে বসে চিকিৎসার জন্য যা করতে হবে তা নিচে এক এক করে উল্লেখ করার চেষ্টা করছি। সব গুলো সঠিকভাবে মেনে চললে শিশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা দ্রুত ভাল হয়ে যাবে

ডায়রিয়ায় শিশুদের পানিশূন্যতার চিকিৎসা

ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে সব থেকে বেশি সমস্যা দেখা দেয় পানি শূন্যতা। কারণ বার বার পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণে শরীর থেকে পানি ও লবন বের হয়ে যায়, ফলে শরীরের পানি ও লবণের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই ডায়রিয়া হলে সবার আগে শরীরের পানি ও লবনের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

পানি শূন্যতা পূরণের জন খাবার স্যালাইনের বিকল্প নেই।  এজন্য ডায়রিয়া হলে শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় বাচ্চা যা খেতে পারে এমন ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।

যেভাবে স্যালাইন খাওয়াবেন

১। প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৫০-১০০ মিলি তরল পানীয় বা স্যালাইন খাওয়াবেন।

২। শিশুর বয়স যদি ২ থেকে ১০ বছর হয় তাহলে তাকে ১০০-২০০ মিলি স্যালাইন বা  তরল পানীয় খাওয়াবেন।

৩। শিশুর বয়স যদি ১০ বছরের বেশী হয় তাহলে প্রতিবার পাতলা পায়খানা হওয়ার পর সে যত টুকু খেতে পারে ততটুকু স্যালাইন বা  তরল পানীয় খাওয়াবেন।

আরো পড়ুনঃ গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ ও দাম সহ গ্যাসট্রিকের ঔষধের নাম

বাচ্চাদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে কি খাওয়া উচিত?

ডায়রিয়া হলে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে পানি শূন্যতার প্রতি। তাই যখনই পাতলা পায়খানা হবে তখনই স্যালাইন খাওয়াতে হবে।

ডায়রিয়া হলে শিশুকে বুকের দুধ বা পিডারে দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না । যদি খাওয়ার সময় শিশু বমি করে তাহলে  অল্প অল্প করে কিছুক্ষন পর পর খাওয়াতে হবে।

দুধের পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবার যেমন, চিড়ার পানি, ভাতের মাড়, কিংবা ডাবের পানি খাওয়াতে পারেন। ভাতের মাড় খাওয়াতে চাইলে সাথে সামান্য লবণ দিয়ে নিবেন।

যেসব শিশু শক্ত খাবার খেতে পারে এমন শিশুদের দুই বেলা খাবারের মাঝে ছোট ছোট চুমুকে পানি খাওয়াবেন।

শিশুকে একটু পর পর পেট ভরে খাওয়াবেন না। প্রতি ৩/৪ ঘণ্টা পর পর খাওয়াবেন। একবারে অনেক বেশী খাবার না দিয়ে বা পেট বরে না খাওয়াইয়ে বার বার অল্প অল্প করে খাওয়াবেন ।

শিশুদের খাবারের ফর্মুলা যে পরিমাণে নির্দেশনা দেওয়া থাকে,সেভাবেই বানিয়ে খাওয়াবেন। তার চেয়ে পাতলা বা ঘন ফর্মুলা বানিয়ে বাচ্চাকে খাওয়াবেন না।

ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে যা খাওয়াবেন না

ডায়রিয়া হলে বাচ্চাদের বাহিরের কোন খাবার, ফলের জুস, বা কোমল পানীয় খাওয়াবেন না। এতে ডায়রিয়া আরো বেড়ে যেতে পারে। ডায়রিয়া হলে সব ধরনের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারবেন। নির্দিষ্ট কোন খাবার খাওয়াতে হবে এমন কিছু নেই। অনেকেই মনে করেন যে ডায়রিয়া হলে অন্য কিছু খাওয়ানো যাবেনা শুধু সাদা ভাত আর কাঁচকলা খাওয়াতে হবে। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি সবরকমের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারবেন।

ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার ঔষধ

শিশুদের ডায়রিয়া হলে ভয় থাকে সবার। কারণ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হবে।কারোর ডায়রিয়া হলে সেটা সাধারণত ৫-৭ দিনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যায়। তবে ডায়রিয়ার কারণে সৃষ্ট পানিশূন্যতার দিকে সব থেকে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে। তাহলে তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে যাবে। তবে সঠিকভাবে চিকিৎসা নিলে বাড়িতে বসেই ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিচে বাচ্চাদের ডায়রিয়া হলে যেসব ঔষধ খাওয়াতে পারবেন তা উল্লেখ করা হলো —

১। খাবার স্যালাইন: 

ডায়রিয়া হলে সব থেকে বেশি খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। শিশুর বয়স অনুযায়ী যত টুকু খাবার স্যালাইন কেতে পারবে ঠিক ততটাই প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর খাওয়াতে হবে। তা ছাড়া ও তরল জাতীয় খাবার চিড়ার পানি, ভাতের মাড়, কিংবা ডাবের পানিও পাতলা পায়খানার পর খাওয়াতে পারেন। খাওনোর সময় বমি ভাব হলে বা বমি করলে একটু একটু করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।

২। জিংক ট্যাবলেট: 

ডায়রিয়া রোধে জিংক ট্যাবলেট বা সিরাপ ভাল কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, জিংক ট্যাবলেট বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা হবার সময়কাল এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে দ্রুত সুস্থ করতে সাহায্য করে। ডায়রিয়ার সময় শিশুকে ১০-১৪ দিনের জন্য ২০ মিলিগ্রাম করে জিংক ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ খাওয়াতে পারেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াবেন।

৩। প্যারাসিটামল: 

ডায়রিয়া হলে যদি শিশুর পেটে জ্বালা বা অস্বস্তি বোধ করে এমন মনে হলে প্যারাসিটামল খাওয়াতে পারেন। শিশুর বয়স অনুযায়ী সঠিক পরিমান জেনে ঔষধ খাওয়াবেন। শিশুকে ঔষধ খাওয়ানোর আগে ঔষধের সাথে থাকা নির্দেশিকা ভালো মত পড়ে নিবেন অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াবেন।

৪। লোপেরামাইড-জাতীয় ঔষধ: 

যদি বাচ্চার অবস্থা খুবই খারাপ হয় বার বার একটু পর পর পাতলা পায়খানা করতে থাকলে প্রয়োজনে কয়েক ঘণ্টার জন্য পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে ডাক্তার লোপেরামাইড-জাতীয় ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে মনে রাখতে হবে ঔষধটি কখনই ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদেরকে খাওয়ানো যাবেনা। এতে বাচ্চার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ

নিচে কয়েকটি পাতলা পায়খানার সিরাপ এর নাম দেওয়া হল যা পাতলা পায়খানা হলে ডাক্তাররা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
  1. Ciprocin
  2. Amodis
  3. Zox
  4. Filmet
  5. Nitanid

যেকোন ঔষধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাওয়াবেন। আর ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে শুধু ঔষধ খাওয়ালেই হবে না পাশাপাশি ঔষধের সাথে বাচ্চাকে পুষ্টিকর খাবারও খাওয়াতে হবে। কারণ ডায়রিয়া হলে বাচ্চাদের শরীর থেকে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান বেরিয়ে যায়। 

তাই ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এবং বড় শিশুদের জন্য ঔষধের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে। তবে শিশুর অবস্থা যদি মারাত্মক হয়ে যায় বা  পানিশূন্যতা বেশি দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ কান ব্যাথা দূর করার উপায়।কানের ব্যাথার ঔষধের নাম বাংলাদেশ

পরিবারে ডায়রিয়ার বিস্তার রোধে করণীয়

পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হলে রোগীর শরীর অনেক দূর্বল হয়ে যায় তাই তখন বাচ্চাদের  পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রামে রাখবেন। বিশ্রামে থাকলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে এবং পাশাপাশি ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়া রোধে ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ডায়রিয়া ভাল হয়ে যাওয়ার পরেও কমপক্ষে দুই দিন বিশ্রামে রাখতে হবে। বাচ্চাকে বাহিরে, স্কুলে বা মাঠে খেলতে পাঠানো যাবেনা। এতে অন্যদের মাঝেও এই পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া ছড়াতে পারে । ডায়রিয়া বিস্তার ঠেকাতে আরো কিছু করণীয় রয়েছে —

বারবার সাবান ও পানি দিয়ে শিশুর হাত ধোওয়া এবং খাওয়ার আগে ও পরে ভালভাবে হাত দোয়া নিশ্চিত করবেন।

শিশুদের প্রয়োজনীয় কাপড় যা ডায়রিয়া থাকাকালীন পড়েছে অথবা পায়খানার সংস্পর্শে এসেছে এমন কাপড় বা বিছানার চাদর গরম পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।

ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা থাকা অবস্থায় ব্যবহৃত সকল আসবাব পত্র বা জায়গা যা জীবাণুর সংস্পর্শে আসতে পারে এমন জায়গা ও জিনিসপত্র প্রতিদিন পরিষ্কার করবেন।

শিশুর ডায়রিয়ায় কখন দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন?

ডায়রিয়া হলে ঘরোয়া চিকিৎসায় ভাল হয়ে যায় তবে কখনো কখনো তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। শিশুর ডায়রিয়া হলে যদি নিচের লক্ষণগুলোর কোন একটি দেখা দেয়, তাহলে দেরী না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। লক্ষণ গুলো হল-

  • পায়খানার সাথে কোন রক্ত বা আঠালো মিউকাস বের হতে দেখলে।
  • ডায়রিয়ার পাশাপাশি প্রচণ্ড পেটব্যথা।
  • কয়েকদিন চলে যাওয়ার পরে ও ডায়রিয়ার অবস্থার উন্নতি না হওয়া।
  • প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া বা ১২ ঘণ্টায় একবারও প্রস্রাব না হওয়া।
  • অতিরিক্ত পানিশূন্যতা দেখা দেওয়া।
  • ডায়রিয়ার সাথে দুদিনের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকা।
  • বার বার শিশুর হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসা ও ত্বকে হালকা ছোপছোপ দাগ হওয়া।

উপরে উল্লেখিত লক্ষণ সমূহ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে।

শেষ কথা

বাচ্চাদের ডায়রিয়া হলে খুবই চিন্তার বিষয়। বার বার ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। সঠিকভাবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই বাচ্চাদের ডায়রিয়া হলে করণীয় বাচ্চাদের ডায়রিয়া ভাল হওয়ার ঔষধ জেনে ঘরে বসেই চিকিৎসা করুন। বাচ্চা দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠবে। ধন্যবাদ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url