ই-সিম (eSIM) কী? কীভাবে ব্যবহার করবেন এবং এর সকল সুবিধা ও অসুবিধা।

 ই-সিম কী? কীভাবে কাজ করে এবং এর সকল সুবিধা ও অসুবিধা। ই-সিম  নামটা অনেকেই হয়তো নতুন শুনতেছেন যদিও এটা বের হইছে অনেক আগেই। বিভিন্ন দেশে ও এই সিম সেবা চালু রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে ও এই সিম সেবা চালু করেছে। গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এর দিন  ই-সিম  নামে নতুন আরেকটি সিম সেবার যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশে। 

সম্প্রতি বাংলাদেশে ই-সিম লঞ্চ হওয়ার পর থেকেই সবার মাঝে একটা কৌতূহল তৈরী হযেছে যে ই-সিম কি? এটা কিভাবে কাজ করে বা এর সুবিধা অসুবিধা কি? তাই যদি আপনার মনেও একই রকম প্রশ্ন জেগে থাকে এবং ই-সিম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিক্যালটি আপনার জন্য। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিক্যালটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।এই আর্টিক্যালটি ইংরেজিতে পড়ুন এখানে

ই-সিম (eSIM) কী? কীভাবে কাজ করে এবং এর সকল সুবিধা-অসুবিধা।

 ই-সিম (eSIM) কী? কীভাবে ব্যবহার করবেন এবং এর সকল  সুবিধা ও অসুবিধা। 

বর্তমানে সিমের সাইজ দিন দিন ছোট হচ্ছে। একটা সময় মিনি সিমকার্ডই চলতো দিন দিন আপগ্রেড হয়ে তা আস্তে আস্তে ছোট হতে লাগলো। বর্তমানে আমরা মিনি সিমকার্ডের চেয়ে মাইক্রো কিংবা ন্যানো সিমকার্ড ব্যবহার করতেই আমরা এখন অভ্যাস্ত হয়ে পড়ছি। বর্তমানে বেশিরভাগ ফোনেই ন্যানো সিম ব্যবহার করা হয় এরপরও আমরা দুইটা ন্যানো সিমের জন্য স্মার্টফোনে বা স্মার্টওয়াচে যতোটুকু জায়গা এখন দরকার হয়, সেটা আরো কমিয়ে আনতে পারলে জায়গাটা আরও ভালোভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ থাকবে। এই চিন্তা ভাবনা থেকেই মূলত ই-সিমের আবির্ভাব হয়।

আরো পড়ুনঃ পেওনিয়ার থেকে বিকাশে সরাসরি টাকা আনার উপায়  

ই-সিম শুধু ডিভাইস তৈরী কারীদের জন্যই সুবিধা বয়ে আনবেনা , ব্যবহারকারীদের জন্যও ই-সিম নানা সুবিধা প্রদান করবে। তাই, বলাই যায় বর্তমান এই প্রযুক্তির সময়ে সাধারণ সিমকার্ডের যুগ সমাপ্তি টেনে ই-সিম হবে আগামী দিনে ভবিষ্যৎ, একথা এখন জোর দিয়েই বলা যায়। তো বন্ধুরা  চলুন এবার জেনে নিই, ই-সিম সম্পর্কে বিস্তারিত এবং সাধারণ সিমকার্ডের চেয়ে ই-সিম কতোটুকু আমাদের সুবিধা দিবে  বা ই-সিম কিভাবে কাজ করে।

ই-সিম কী What is eSIM? 

ই-সিম (eSIM) হচ্ছে এক ধরণের উন্নত প্রযুক্তির সিম বা এমবেডেড সিম । এমবেডেড শব্দটির সুন্দর কোন বাংলা শব্দ পাওয়া যায়নি তাই এই আর্টিক্যালে  আমরা তাই এমবেডেড শব্দটিই ব্যবহার করবো।

গুগল নিউজে পাঁচমিশালী সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

এমবেডেড সিম যদিও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে  কিন্তু এর মূল কাজ প্রচলিত সিমকার্ডের মতই । সেই হিসেবে আমরা থাকে প্রচলিত সিমকার্ডের প্রতিস্থাপক বা আপগ্রেড ভার্সন বলতে পারি । তবে এর মধ্যে সব থেকে বড় পার্থক্য হচ্ছে প্রচলিত সিমকার্ডের মতো এমবেডেড সিম আলাদা করে খোলা বা লাগানোর কোন সুযোগ নেই। 

নতুন ই-সিম এটি প্রচলিত ব্যবহৃত ন্যানো সিমের চেয়েও আরো অনেক ছোট। এটি অন্যান্য সিমের মত নয় এটা একধরণের কানেক্টিং চিপ হিসেবে এটি সাপোর্টেড ডিভাইসের মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত করা হয় ডিভাইস তৈরীর সময়ই। তাই এটা খুলা বা লাগানোর কোন সুযোগ থাকছে না। সেই হিসেবে এটাকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল সিমকার্ডও বলা যেতে পারে। 

ই-সিম (eSIM) কী? কীভাবে কাজ করে এবং এর সকল সুবিধা-অসুবিধা।

এতটুকু পড়ার পরে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন জাগতে পারে যে তাহলে কি অন্যান্য কোম্পানির সিম ব্যবহার করা যাবে না?  বা  নাম্বার চেঞ্জ করা  বা একাধিক কোম্পানির সিমকার্ড একত্রে ব্যবহার করা যাবে কিনা। আসল কথা হল ব্যবহার করা যাবে না কিন্তু  দুশ্চিন্তার ও কিছু নেই। ই-সিম যুক্ত ডিভাইসে আগামীর দিনগুলোতে সাধারণ সিমকার্ড ব্যবহারের মতো কোন স্লট দেওয়া হবে না । তবে সেটা নিয়ে টেনশনের কিছু নেই।

আরো পড়ুনঃ প্রোগ্রামিং ভাষা কি ? ১০ টি জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা যা আপনাকে চাকরি পেতে সাহায্য করবে। 

কারণ, e-Sim যুক্ত ডিভাইসে সিমকার্ড পরিবর্তন করা না গেলেও আপনি ই-সিমের সাহায্যেই যে কোন অপারেটর এবং নাম্বার পরিবর্তন করার সুযোগ পাবেন । একই সাথে একাধিক নাম্বার বা  ডুয়েল সিম একসাথে ব্যবহারের কাজটিও ই-সিমের মাধ্যমে করতে পারবেন। এবং সেটা আরো সহজ হবে বলে জানা যায়।

ই-সিম (e-Sim) ফিজিক্যালি বা দেখতে  সাধারণ সিমকার্ডের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও প্রযুক্তিগত দিক থেকে দুইটা কিন্তু একইভাবে কাজ করবে। অর্থাৎ সাধারণ সিমকার্ড যেভাবে কাজ করে ঠিক একই ভাবে ই-সিম ও জিএসএম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেই কাজ করে।

ই-সিম এর পূর্ণরূপ কি? eSim Full form 

ই-সিম বা এমবেডেড সিম এর পূর্ণরূপ হল এমবেডেড সাবস্ক্রাইবার আইডেনটিটি মডিউল(Embedded Subscriber Identity module) 

E= Embedded 

S= Subscriber 

I = Identity 

M = module 

তবে ই-সিম বা এমবেডেড সিম নামেই পরিচিত। 

আপনি কি এখন ই-সিম ব্যবহার করতে পারবেন?

আপনি যদি বাংলাদেশে থাকেন তাহলে এই মুহূর্তে আপনার কাছে যদি  ই-সিম সাপোর্টেড ডিভাইস থাকে তাহলে আপনি এখনো ব্যবহার করতে পারবেননা। গত ১৬ ই ডিসেম্বর ২০২১ বিজয় দিবসে বাংলাদেশে ই-সিম সেবা চালু হয়। 

বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশেই এখন ই-সিম সেবা চালু রয়েছে। তাই, আপনি সেসব দেশে এধরণের কোন অপারেটরের গ্রাহক হয়ে থাকেন  এবং আপনার কাছে ই-সিম সাপোর্টেড ডিভাইস থাকে তাহলে আপনি এই মুহূর্তে ই-সিম ব্যবহার করতে পারবেন কোন সমস্যা হবে না। 

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে ছবি এডিট করার সেরা ৫টি অ্যাপ ২০২১ 

বর্তমানে ই-সিম সাপোর্টেড যেসব ডিভাইস রযেছে সেগুলোতে ই-সিমের পাশাপাশি সাধারণ সিমকার্ডের জন্য স্লট রাখা আছে এর কারণ এখনো ভালভাবে সব দেশে এই ই-সিম সেবা চালু হয়নি । তাই আপনি যে কোন টাই এখন ব্যবহার করতে পারবেন। 

বাংলাদেশে কি ই-সিম ব্যবহার করা যাবে? 

যদিও বাংলাদেশে ই-সিম সেবা চালু হয়েছে তবে সব অপারেটর এখনো চালু করেনি।দেশে প্রথমবারের মত ই-সিম সেবা চালু করলো গ্রামীনফোন। গ্রামীণফোনের ওয়েবসাইটে একটা তথ্যে বলা হয়েছে, গ্রাহকরা এখন থেকে নতুন সিম কার্ড কিনতে অথবা ব্যবহৃত নম্বরটি ই-সিম হিসেবে প্রতিস্থাপন করতে পারবে। ২৫ এপ্রিল ২০২২ থেকে গ্রাহকরা ই-সিম সংগ্রহ করতে পারবেন। অন্যান্য অপারেটর ও খুব শীঘ্রই চালু করবে। 

 গ্রামীনফোন ই-সিম সেবা 

আমাদের দেশে সর্বপ্রথম গ্রামীনফোন কোম্পানি নিয়ে আসলো ই-সিম সেবা। গ্রামীণফোনের নতুন ই-সিম সংযোগ পেতে হলে গ্রাহকরা ই-সিম সাপোর্ট করে এমন ডিভাইস নিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের গ্রামীণফোনের এক্সপেরিয়েন্স সেন্টারে যেতে হবে। প্রথমে আপনাকে আইডি কার্ড দিয়ে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করতে হবে তারপর ই-সিমের জন্য অনুরোধ করতে হবে। তাছাড়া অনলাইনে গ্রামীণফোন শপের মাধ্যমে এই সিমের জন্য অনুরোধ করতে পারবেন।

গ্রামীনফোন ই-সিমের দাম

গ্রামীনফোনের ই-সিমের ক্ষেত্রে নতুন সংযোগের জন এর দাম রাখা হয়েছে ২০০ টাকা। তাছাড়া অন্যান্য প্লাস্টিক সিম থেকে ই-সিমে বা ই-সিম থেকে ই-সিমে রিপ্লেসমেন্ট করতে হলে ৯৯ টাকা ফি জমা দিতে হবে। একটি ই-সিমে একাধিক নেটওয়ার্ক ও নম্বর সংযুক্ত করতে পারবেন তবে সেটা আপনার হ্যান্ডসেটের ওপর নির্ভর করে।

কোন কোন ফোনে ই-সিম সেবা চালু রয়েছে? 

১। আইফোনঃ আইফোন ১৩ সিরিজ, আইফোন ১২সিরিজ, আইফোন ১০আর, আইফোন ১০এস ও আইপ্যাড প্রো। 

২। স্যামসাংঃ স্যাসসাং এর গ্যালাক্সি এস২১ সিরিজ, এস২০ সিরিজ, গ্যালাক্সি ফোল্ড, জি ফ্লিপএবং নোট ১০ এর সকল ভার্সন। 

৩। গুগল পিক্সেলঃ  গুগল পিক্সেল ৬ সিরিজ, পিক্সেল ৫ সিরিজ, পিক্সেল ৪ সিরিজ, পিক্সেল ৩ সিরিজ।

৪।মটোরোলাঃ মটোরোলা রেজার (কোনো সিম স্লট নেই, শুধু ই-সিম রয়েছে)

যেসব স্মার্ট ওয়াচে ই-সিম সেবা চালু রয়েছে।

  • ‌অ্যাপল ওয়াচ এর সকল সিরিজ। যেমন, সিরিজ ৬, সিরিজ ৫, সিরিজ ৪, সিরিজ ৩
  • ‌স্যামসাঙ গ্যালাক্সি ওয়াচ। 
  • ‌হুয়াওয়ে ওয়াচ।

 তাছাড়া ও উইন্ডোজ ১০ বা তার উপরের ভার্সনে  বেশকিছু ল্যাপটপেও ই-সিম ব্যবহার করা যাবে ।

যেভাবে ই-সিম ব্যবহার করবেনঃ

আপনি যদি ই-সিম ব্যবহার করতে চান তাহলে প্রথম যে শর্ত তা হল আপনার ই-সিম সাপোর্টেড ডিভাইস থাকতে হবে এবং ই-সিম সেবা দেয় এমন কোন মোবাইল অপারেটরের গ্রাহক হতে হবে  তাহলে আপনি খুব সহজেই ই-সিম(eSIM) ব্যবহার করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ কপিরাইট ফ্রি ভিডিও ডাউনলোড করার সেরা ৫ টি ওয়েবসাইট ২০২১

যেহেতু ই-সিম অন্যান্য সিমের মত ফিজিক্যালি ইনসার্ট করার কোন সুযোগ থাকছে না , তাই আপনার ডিভাইসে ই-সিমকার্ড অ্যাক্টিভ করার পুরো কাজটি করতে হবে বিশেষ একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে। তবে চিন্তার কিছু নেই এজন্য আপনার বিশেষ কোন সফটওয়্যার ইন্সটল করা বা কারোর নিকট স্মরণাপন্ন হওয়ার ও প্রয়োজন হবে না ।

 ই-সিম সাপোর্টেট সকল ডিভাইসে ই-সিম সেটাপ করার সফটওয়্যার ম্যানুয়ালি দেওয়া থাকে। ফলে সেই সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেটিং থেকে খুব সহজেই আপনি নিজে নিজেই  ই-সিম সেটাপ করে নিতে পারবেন কোন ঝামেলা ছাড়াই।

আপনি যদি আপনার ডিভাইসে ই-সিম এক্টিভ করতে চান তাহলে প্রথমে আপনাকে মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আপনি আপনার  কোন নাম্বার এবং কোন প্ল্যানে ই-সিম নিতে চান সব কিছু তাদেরকে বিস্তারিত জানাতে হবে। এরপর মোবাইল অপারেটর কোম্পানি আপনাকে কিউআর কোড সম্বলিত একটি কার্ড দিবে যা দিয়ে ই-সিম অ্যাক্টিভ করতে পারবেন।  QR কোড কার্ডের জন্য আপনাকে অতিরিক্ত কিছু টাকা পেমেন্ট করতে হতেও পারে এইসব কিছুই নির্ভর করে মোবাইল অপারেটর কোম্পানির উপর।

যখন আপনাকে ই-সিম অ্যাক্টিভিশনের জন্য কার্ড দেওয়া হবে, তখন সেটাকে শুধু আপনার যে ডিভাইসে এক্টিভ করতে চান ওই ডিভাইসের নির্দিষ্ট সেটিং থেকে QR কোডটি স্ক্যান করে নিতে হবে। একেক ফোনে একেক রকম সিস্টেম থাকে তাই নিচে আলাদা আলাদা ভাবে উল্লেখ করা হল।

 আইফোনে ই-সিম সেটআপ করার নিয়মঃ

  • প্রথমে আপনাকে সেটিংস এ যেতে হবে।
  • তারপর Cellular (or Mobile Data) অপশনে ক্লিক করবেন। 
  • তারপর  Add Cellular Plan অপশনটিতে ক্লিক করে অপারেটর থেকে পাওয়া QR কোডটি স্ক্যান করে নিন।

অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ই-সিম সেটাপ করার নিয়মঃ

  • প্রথমে আপনার ফোনের সেটিংস অপশনে যাবেন।
  • এরপর Network & internet অপশন পাবেন তাতে ক্লিক করুন ।
  • তারপর Add একটি অপশন দেখতে পাবেন সেই Add  অপশনটিতে ক্লিক করুন এবং স্ক্রিনে আসা ইন্সট্রাকশন ফলো করুন। এবং Use 2 Number এই অপশনটি সিলেক্ট করে দিন ।

যে কোন স্মার্টওয়াচের ক্ষেত্রে  ই-সিম অ্যাক্টিভ করতে পারবেন ফোনে থাকা অ্যাপের মাধ্যমেই।

ই-সিম ব্যবহারের সুবিধাঃ

ই-সিমের অনেক সুবিধা রয়েছে এর মধ্যে সব থেকে বড় সুবিধাটি হচ্ছে, নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করা। আপনার ফেন  যদি একটি সিম সাপোর্টেড ডিভাইস হয় তখন দেখা যায় যে অন্য নেটওয়ার্কের সিম ব্যবহার করতে হলে সিম খুলে  অপর সিমটি লাগাতে হয় যা খুবই ঝামেলা। কিন্তু ই-সিমে এক নিমিষেই নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করা যায় সিম খুলা বা লাগানোর প্রয়োজন পরে না। 

আরো পড়ুনঃ পুরনো নষ্ট বা ঝাপসা ছবি ক্লিয়ার করুন মাত্র এক মিনিটেই! 

ই-সিম ব্যবহার করে এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য যে কোন  নেটওয়ার্কে খুব সহজেই সুইচ করা যাবে। একটি ই-সিমে একই সাথে কমবেশি ৫টি ভার্চুয়াল সিম কার্ড এর তথ্য সংরক্ষণ সম্ভব হবে ফলে এক নিমিষেই যে কোন নেটওয়ার্কে সুইচ করতে পারবে । অর্থাৎ এমন কোন জায়গা যেখানে এক সিমের নেটওয়ার্ক না থাকলে অন্য কোন সিমের নেটওয়ার্ক থাকলে তা খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবে।

ডুয়েল সিম যুক্ত ফোনে ও ই সিম ব্যবহার করতে পারবেন এবং ডুয়েল সিমের পাশাপাশি একই সাথে ই-সিম ব্যবহারের সুযোগ থাকছে। 

বিভিন্ন কাজের জন্য আলাদা আলাদা নাম্বার ব্যবহার করতে পারবেন। ব্যাক্তিগত যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটা ব্যবসায়িক বা অফিসিয়াল কাজে আরেকটা। 

এই সিমের আরেকটি বড় সুবিধা হল দেখতে খুবই ছোট। বর্তমানে  প্রচলিত তিন ধরনের সিমের মধ্যে সবচেয়ে ছোট যে সিম  ন্যানো সিমকার্ড তার চেয়ে প্রায় ৩গুণ ছোট এই ই-সিম কার্ড।যেকানে সব থেকে ছোট ন্যানো সিমকার্ড ফোনে লাগানোর জন্য  ১০৮.২৪ বর্গ মিলিমিটার জায়গার দরকার হয়, সেখানে মাত্র ৩০ বর্গ মিলিমিটার জায়গাতে ই-সিম এর চিপ বসানো যায়।যার কারণে আগের সিম স্লটের জন্য স্মার্টফোনে যে জায়গা রাখতে হতো সে জায়গাটুকু অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে। 

ই-সিম যেহেতু লাগানো বা খুলার প্রয়োজন নেই তাই ওয়াটারপ্রুফ বা ডাস্টপ্রুফ ডিভাইসও তৈরী করা যাবে খুব সহজেই। ব্যবহারকারীরাও ই-সিম যুক্ত ফোন ব্যবহারে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। 

কোথাও গেলে কয়েকটা সিমকার্ড সাথে পকেটে নিয়ে ঘুরার কোন প্রয়োজন হবে না। দরকার হবে না সিমকার্ড খোলার জন্য কোন পেপারক্লিপ বা আলপিন।

ই-সিম ব্যবহারের অসুবিধাঃ

eSim সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা ও রয়েছে। ই-সিম ব্যবহারে আপনি কিছু অসুবিধায় পড়তে পারেন।

যেহেতু ই-সিম খুলা বা লাগানোর কোন সুযোগ নেই তাই আপনি যখন আপনার মোবাইল ফোন বা ডিভাইসটি কোন কারণে চেঞ্জ করবেন তখন এখনকার মতো সিমকার্ডটা খুলে নতুন ফোনে লাগাতে পারবেন না।

এজন্য ডিভাইস পরিবর্তনের সময় মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সাথে যোগাযোগের দরকার হতে পারে। এছাড়া আপনার ফোনে বা  ডিভাইস কোন সমস্যা হলে সেটা নিজে নিজে ঠিক করা কঠিন হতে পারে। 

কখনো ফোন বা ডিভাইস টি হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হওয়ে গেলে তখন অন্য ফোনে এই সিমটি লাগালে সকল তথ্য পাওয়া যেতো কিন্ত ই-সিমের ক্ষেত্রে মোবাইল নষ্ট বা হারিয়ে গেলে সাথে সাথে সিম এ থাকা সকল তথ্য ও চলে যাবে । বিশেষ করে মোবাইল নাম্বার সমূহ।

তা ছাড়া ই-সিম নতুন প্রযুক্তি হিসেবে এখনো পুরোপুরি ভাবে সব দেশে সব জায়গায় তার সার্ভিস পাওয়া দুস্কর। এখনো জনপ্রিয় হতে এবং পুরোপুরি মূলধারার প্রযুক্তিতে প্রবেশ করতে আরো অনেক সময় লাগবে। 

তবে সব দিক বিবেচনা করে দেখা যায় যেহেতু অসুবিধার চেয়ে সুবিধা ই বেশি । তাই, আশা করা যায় আগামীতে  ই-সিম এসব সীমাবদ্ধতা বা সকল সমস্যা গুলো কাটিয়ে আধুনিক ও স্মার্ট একটি জনপ্রিয় সিম হয়ে উঠবে। 

শেষ কথা 

ই-সিম বা এমবেডডেড সিম নতুন প্রযুক্তি হিসেবে আগামীতে এর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে। ই-সিম (eSIM) সম্পর্কে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করেছি।  আশা করি ই-সিম কী, এটা কীভাবে কাজ করে এবং ই-সিমের সুবিধা অসুবিধাগুলো সকল কিছুই ভালভাবে বুঝতে পেরেছেন। ই-সিম নিয়ে আমাদের এই লেখাটি আপনার ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই সোশাল মিডিয়া বা আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের ও জানিয়ে দিন । এবং  ই-সিম আজকের আর্টিক্যাল সম্পর্কে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে জানিয়ে দিন আমাদের কমেন্ট বক্সে। সবাইকে ধন্যবাদ। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url